অধাতুর অক্সাইডগুলো পানির সাথে বিক্রিয়া করে বিভিন্ন এসিড উৎপন্ন করে। বিশুদ্ধ বায়ুতে কিছু পরিমাণ কার্বন ডাই-অক্সাইড এবং নাইট্রোজেনের বিভিন্ন অক্সাইড থাকে। প্রাণী শ্বাস ক্রিয়ার সময় বায়ুতে কার্বন ডাই-অক্সাইড নিঃসরণ করে। আবার, যে স্থানে বজ্রপাত হয় সেই স্থানের বায়ুর তাপমাত্রা 3000°C সৃষ্টি হয়। এ তাপমাত্রায় বায়ুতে উপস্থিত N2 ও O2 বিক্রিয়া করে NO উৎপন্ন করে। NO বায়ুর অক্সিজেন দ্বারা জারিত হয়ে NO2 উৎপন্ন করে। বৃষ্টির পানিতে এ সকল অক্সাইড দ্রবীভূত হয়ে সামান্য পরিমাণ এসিড উৎপন্ন করে। এই এসিড বৃষ্টির পানির সাথে মাটিতে পতিত হয়। এসিডযুক্ত বৃষ্টিকে এসিড বৃষ্টি বলে।
CO2(g) + H2O(l) → H2CO3 (aq)
2NO2(g) + H2O(l) → HNO2(aq) + HNO3 (aq)
তাই বৃষ্টির পানির pH এর মান 5 থেকে 6 এর মধ্যে হয়। কিন্তু মনুষ্য সৃষ্ট কিছু কারণ যেমন - বিভিন্ন যানবাহন থেকে, বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে, কলকারখানা থেকে প্রচুর পরিমাণ কার্বন ডাই-অক্সাইড বাতাসে চলে আসে, যা বৃষ্টির পানির সাথে বিক্রিয়া করে কার্বনিক এসিড (H2CO3) উৎপন্ন করে। এছাড়া বিদ্যুৎ কেন্দ্র, ইটভাটা প্রভৃতিতে নাইট্রোজেন ও সালফারযুক্ত কয়লা বা পেট্রোলিয়াম ব্যবহার করলে নাইট্রোজেন ও সালফারের বিভিন্ন অক্সাইড উৎপন্ন করে। এরা বৃষ্টির পানিতে দ্রবীভূত হয়ে বিভিন্ন এসিড উৎপন্ন করে। এই এসিডসমূহ বৃষ্টির পানির সাথে মাটিতে পতিত হয়।
তাই কোনো স্থানে উপরোল্লেখিত কোনো কারণে কখনো কখনো বৃষ্টির পানিতে বিভিন্ন এসিডের পরিমাণ স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হয়ে যায়। ফলে বৃষ্টির পানির pH এর মান কমে 4 বা তারও কম হয়ে গেলে সে বৃষ্টিকে এসিড বৃষ্টি বলে। এর ফলে মাটির pH এর মান কমে যায়। ফলে ফসল বা গাছপালার বিরাট ক্ষতি হয়। জলাশয়ের পানির pH এর মান কমে যায়। ফলে জলজ উদ্ভিদ ও প্রাণী বসবাসের অনুপযুক্ত হয়ে যায়। মৎস্য উৎপাদন ব্যাহত হয়। এ ছাড়া এসিড বৃষ্টির কারণে দালান - কোঠা, ধাতুর তৈরি বিভিন্ন স্থাপনা, মার্বেল পাথর দিয়ে তৈরি স্থাপত্য বা ভাস্কর্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
Read more